কিছুই বলছি না
–সুমিত মোদক
যারা ভাষাটি ঠিকঠাক উচ্চারণ করতে পারে না,
যারা ভাষাটি ঠিকঠাক বলতে শিখলো না,
তারাই চিল-চিৎকার শুরু করে ভাষা নিয়ে;
যখন টিভির সংবাদে দেখি ভাষা নিয়েও অসহিষ্ণুতা,
তখনই লজ্জা লাগে;
তখনই মনে হয় এ কি আমার সেই বিদ্যাসাগরের মাটি!
এ কি আমার সেই রবীন্দ্র-নজরুলের মাটি!
নাকি অন্য কোনও এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ!
যে তার ইতিহাস, ঐতিহ্য, পরম্পরা হারাতে বসেছে!
কেনও খুলে ফেলতে হবে অন্য ভাষার সাইন বোর্ড!
কেনও দোকান ভাঙচুর হবে ভাষার জন্য;
কেনও ট্রেনের টিটিকে বাধ্য করা হবে আমার মাতৃভাষা বলতে!
কেনও, কেনও …
আমরা মাতৃভাষা সাড়ম্বরে পালন করি;
বলি, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান …
ভাষা তার স্বাধীন অধিকার …
আমি, আমরা সবাই দেখছি;
অথচ, কিছুই বলছি না, প্রতিবাদ তো দূরের কথা !
আর কিছু সুযোগ সন্ধানী নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থে ভাষাকে হাতিয়ার করে এক অসহিষ্ণু
পরিবেশ গড়ে তুলতে চাইছে;
কিন্তু, কেউ একবারও ভেবে দেখলো না,
আমি বা আমরা যখন অন্য ভাষাভাষীর মাটিতে পা রাখবো,
তখন যদি তারা তাদের মাতৃভাষা বলতে বাধ্য করে তখন কি হবে!
তখন কি আমার মাতৃভাষাকে বিসর্জন দেবো
অশুভ শক্তির কাছে!
নাকি প্রতিবাদী হয়ে উঠবো!
এ প্রশ্নের উত্তর দেবে কে!
যারা ভাষার উৎস সন্ধান জানে না;
যারা মাতৃভাষার সম্মান জানাতে পারলো না,
তারাই আজ ভাষার জন্য গলা ফাটায়;
মিছিল করে …
আর আমরা নীরব;
একটি ভাষা একটি জাতীয় পরিচয়;
একটি ভাষা একটি সভ্যতার পরিচয়;
প্রতিটি ভাষা বাঁচে যুগ যুগ…
কেবল মাতৃভাষায় পাওয়া যায় বেঁচে থাকার সুখ।